মুকুল খসরু, কুষ্টিয়া থেকে : কুষ্টিয়া উর্দ্ধমুখি করোনা সংক্রমন ঝুঁকির মুখে আবারও লকডাউন ঘোষনা করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সকাল ৬টা থেকে কুষ্টিয়া শহরের পৌর এলাকায় বিভিন্ন স্পটে বাঁশ বেধে স্বাভাবিক চলাচল বন্ধসহ সকল দোকনপাট বন্ধ করে জেলা প্রশাসন। একই ভাবে ভেড়ামারা উপজেলার পৌর এলাকাসহ দুইটি ইউনিয়নকেও রেড জোন চিহ্নিত করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সকাল থেকেই শহরের প্রবেশপথ ও দোকান বন্ধ রয়েছে। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ঔষুধের দোকান খোলা থাকবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানিয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় তৃতীয় দফায় এই নির্দেশনা দিলো কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। ২৪ জুন বুধবার কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্টেট ও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আসলাম হোসেনের স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন জানান, করোনা ভাইরাসর সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি প্রসমনে জনস্বার্থে সকল মার্কেট, শপিংমল দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান (মুদি, কাঁচামাল, ঔষধ, মোবাইল ব্যাংকিং, মোবাইল রিচার্জ, পশুখাদ্য-মৎস্যখাদ্য, সার-বীজ, কীট নাশক) বেলা ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
এছাড়া অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ভোর ৬ টার মধ্যে কেউ রাস্তায় বের হবেন না। নির্দেশনা না মানলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এর আগে গত এপ্রিল থেকে বন্ধ থাকা মার্কেট-দোকানপাট খোলার জন্য ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে মে মাসের ১০ তারিখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দুরত্ব রক্ষায় কঠোর দায়িত্ব পালন করবেন বলে ব্যবসায়ীদের দেয়া অঙ্গীকারের প্রেক্ষিতে শর্ত সাপেক্ষে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। কিন্তু পরে ব্যবসায়ীদের দেয়া অঙ্গীকার ভঙ্গের কারণে ৭দিন পর ২য় বারের মতো সবকিছু বন্ধের ঘোষনা দেন জেলা প্রশাসন। কিন্তু ঈদের দুইদিন পূর্বে ২৩ মে ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিক্ষুব্ধ তোপের মুখে অনেকটা বাধ্য হয়েই এক জরুরী সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে দোকান-পাট ও শপিংমল মেনে খোলার অনুমোতি দেন। কিন্তু পরক্ষনেই দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মারাত্মক ভাবে লঙ্গন করেছেন দোকান মালিকগণ। এঘটনায় তীব্র ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। দৃশ্যত: অনেকটায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন তারা। এই সময়ের মধ্যেই মহামারি করোনা সংক্রমনের উর্দ্ধমুখি মাত্রায় চরম উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেন তারা।কুষ্টিয়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ২২ এপ্রিল প্রথম কুষ্টিয়ায় করোনা রোগী শনাক্তের পর থেকে ২৩ মে পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো মোট ৩৬জন যাদের অধিকাংশই ছিলেন জেলার বাইরে থেকে আগত। এরপর থেকে জুনের ২৪তারিখ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬১জনে। এপর্যন্ত কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬জনের এবং করোনা লক্ষণ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২জনের।
২৫০শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: তাপস কুমার সরকার বলেন, গত ঈদের আগ পর্যন্ত জেলায় সহনীয় পর্যায়ে আক্রান্তের সংখ্যা থাকলেও ঈদের পর জুনের ১ম সপ্তাহ থেকেই আক্রান্তের ক্রমবৃদ্ধির হার আমাদের চরম শংকিত করে তুলেছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই শহর ও আশপাশের এলাকা থেকেই আসছেন। এভাবে চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই হয়ত নিয়ন্ত্রনহীন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
Comments
Powered by Facebook Comments
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » সরকার করোনায় মধ্যেও সরকার অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন : আওরঙ্গজেব কামাল
- » বাগেরহাট পৌরসভা নির্বাচনে বাকী তালুকদারের মনোনয়ন পত্র জমা
- » মোংলা পোর্ট পৌরসভার ১২টি কেন্দ্রে যাচ্ছে ইভিএম, কঠোর নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী
- » মোংলা পোর্ট পৌরসভায় নির্বাচনি সহিংসতায় কাউন্সিলর প্রার্থীসহ নারীসহ আহত- ৮
- » ঢাকার বর্তমান ও সাবেক মেয়রের বাকবিতান্ডা দলকে সু-সংগঠিত করবে- এলজিআরডি মন্ত্রী
- » শৈলকুপায় কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ৫ ঘন্টা পর অপর প্রার্থীর লাশ উদ্ধার
- » জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চায় সরকার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- » শৈলকুপায় কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাই খুন, ৫ ঘণ্টা পর মিলল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লাশ
- » ভোটের দুদিন আগে করোনায় সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র প্রার্থীর মৃত্যু
- » রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন, ৫ শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই